বিনিয়োগ শিক্ষা কনফারেন্স সিলেট-২০২৩
দেশের জনগণকে বিনিয়োগ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা এবং এ শিক্ষার বিস্তার জেলা পর্যায়সহ সর্বস্তরে পৌঁছে দিতে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) এবং ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) এর যৌথ উদ্যোগে সিলেটে এ কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়।
এতে উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ)’র চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রথম অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এরপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম এবং এর নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমানের সঞ্চালনায় একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন বিএএসএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী, ডিএসই’র পরিচালক মো. শাকিল রিজভী, সিএসই’র পরিচালক মো. সিদ্দিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ মাচেন্ট ব্যাংকার্স আ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট মো. ছায়েদুর রহমান।
এছাড়া এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং সিলেট চেম্বার অব কমার্স আ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি তাহমিন আহমদ প্রমুখ।
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে সিলেট চেম্বার কনফারেন্স হলে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টি’র উদ্যোগে সিলেটে পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক শক্তিশালী। বাংলাদেশের সম্পর্কে বহির্বিশ্বের ধারণাও এখন পরিবর্তন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করছি। আমরা দেশের বাইরে রোড-শো করেছি প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধকরণের জন্য; যদিও তা সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কাজ নয়।’ তিনি বলেন, বিএসইসির কাজ হচ্ছে পলিসি তৈরি করা। আমরা ক্যাপিটাল মার্কেটের অবস্থার উন্নয়নে সম্ভাব্য সবকিছু করেছি। বিনিয়োগকারী ও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে যতরকম প্রস্তাবনা গিয়েছে এবং যত জায়গায় সমস্যা ছিল আমরা সমাধান করেছি। তিনি বলেন, প্রবাসীদের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য ‘নন রেসিডেন্স ইনভেস্টর টাকা একাউন্ট’ বা এনআইটিএ খোলা চালু আছে, এটি অনলাইনেও করা যায়। কোন ব্যাংক এনআইটিএ একাউন্ট খুলতে না চাইলে তিনি তা বিএসইসিকে জানাতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ডেরিভেটিভ মার্কেট চালুর লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি, আশা করি খুব শীঘ্রই তা চালু হবে। আমাদের ভালো পলিসি আছে, কিন্তু বিনিয়োগকারীরা লং টার্ম বিনিয়োগ করতে চান না। কোম্পানী প্রোফাইল দেখে লং টার্ম বিনিয়োগ করলে অবশ্যই তা লাভজনক হবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেন। সভায় বক্তাগণ পুঁজিবাজারের পলিসিগত উন্নয়নে বর্তমান কমিশনের প্রশংসা করেন। বক্তাগণ বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্টকরণ, প্রবাসীদের এনআইটিএ একাউন্ট খোলা সহজীকরণ, আইপিও’র আবেদন ফি ১০ হাজার টাকা থেকে হ্রাসকরণ, বোনাস শেয়ার দ্রুত প্রাপ্তি, ডেরিভেটিভ মার্কেট চালু, বিনিয়োগকারীদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজনসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, শেয়ার বাজার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের এক সম্ভাবনাময় খাত। এ খাতে বিরাজমান সমস্যাবলী চিহ্নিতকরণ ও তা নিরসনের লক্ষ্যে ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভাটি আয়োজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শেয়ার বাজারের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি সময়োপযোগী নীতিমালা প্রণয়নের জন্য বিএসইসির বর্তমান কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। শেয়ার বাজারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা আবার ফিরে আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি ক্যাপিটাল মার্কেটের উন্নয়নে সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতকৃত প্রস্তাবমালা বিএসইসির চেয়ারম্যানের হাতে তুলে দেন।
সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান ফখর উদ্দিন আলী আহমদ, সিনিয়র সহ সভাপতি ফালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, পরিচালক ও ক্যাপিটাল মার্কেট সাব কমিটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ জিয়াউল হক, পরিচালক ফাহিম আহমদ চৌধুরী, সাব কমিটির চেয়ারম্যান ফয়েজ হাসান ফেরদৌস, কো-চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, শাবিপ্রবির প্রফেসর ফজলে এলাহী মো. ফয়সল, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী।
এসময় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মো. সাইফুর রহমান, কামরুল আনাম খান, মাহবুবুল আলম, এ টি এম তারিকুজ্জামান, পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম মজুমদার, মো. মনসুর রহমান, যুগ্ম পরিচালক মো. রশীদুল আলম, সিকৃবির প্রফেসর ড. এম. শফিউল্লাহ ভূঁইয়া, সিলেট চেম্বারের পরিচালক সারোয়ার হোসেন ছেদু, সদস্য সানজিদা খানম, মাহদি সালেহীন, সোনালী ব্যাংকের জিএম সজল কুমার দাস, লংকাবাংলার সিনিয়র এজিএম মোহাম্মদ শামছুদ্দিন, আইসিবির ডিজিএম মেহমুদ হাসান মুরাদ, সিলেট চেম্বারের সচিব গোলাম আক্তার ফারুক, ব্রোকার হাউজ মালিকবৃন্দ ও বিনিয়োগকারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।